top of page

২০২৫-এ ভারতের প্রতিবেশী রাজনীতি: এক নতুন অধ্যায়?



ভূমিকা: কেন এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ?


২০২৫ সাল দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক মানচিত্রে এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো, যেমন বাংলাদেশ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কায় বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনগুলো ভারতের জন্য যেমন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, তেমনি খুলে দিয়েছে বহু সুযোগের দরজা। একটি দেশ হিসেবে ভারত তার 'প্রতিবেশী প্রথম' (Neighbourhood First) নীতিকে কতটা দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, তার পরীক্ষা এখন এই নতুন পরিস্থিতিতে। আসুন, এই তিনটি দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।


🇧🇩 বাংলাদেশ: অন্তর্বর্তী সরকারের উত্থান ও ভারতের ভূমিকা


২০২৪ সালের আগস্টে গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। এরপর, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় একটি অন্তর্বর্তী সরকার। এই পরিবর্তন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যেমন আলোড়ন তুলেছে, তেমনি এর প্রভাব পড়েছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কেও।


প্রথম দিকে, এই নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রী দ্রুত ঢাকা সফর করেন। তার এই সফরকে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। তবে, কিছু অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক উত্তেজনা, বিশেষ করে হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়, সম্পর্ককে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে বাধা দিচ্ছে। এটি ভারতের জন্য একটি সংবেদনশীল কূটনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।


🔍 (ওয়ার্ডস: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ২০২৫, বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকার, শেখ হাসিনার পতন বিশ্লেষণ।)





🇳🇵 নেপাল: কে.পি. ওলির চীনপন্থী অবস্থান ও সীমান্ত রাজনীতি


নেপালে কমিউনিস্ট নেতৃত্ব, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী কে.পি. ওলি, চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। সম্প্রতি তার বেইজিং সফর ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনের সঙ্গে নেপালের এই ঘনিষ্ঠতা ভারতের 'প্রতিবেশী প্রথম' নীতির জন্য একটি কৌশলগত চ্যালেঞ্জ।

ভারত ও নেপালের মধ্যেকার ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক, যা সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সংযোগের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, তা এখন নতুন কূটনৈতিক পরীক্ষার মুখোমুখি। ভারতের জন্য এই পরিস্থিতি সামলানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে যখন সীমান্ত রাজনীতি নিয়ে উত্তেজনা প্রায়শই উঠে আসে।


(🔍ওয়ার্ডস: নেপাল-ভারত সীমান্ত রাজনীতি, কে.পি. ওলি চীন সম্পর্ক, ভারত-নেপাল কূটনীতি ২০২৫।)


🇱🇰 শ্রীলঙ্কা: বামপন্থী নেতৃত্বের উত্থান ও ভারতের কৌশল


শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে একটি অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন এসেছে যখন ঐতিহ্যগতভাবে চীনপন্থী বলে পরিচিত জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (JVP) ক্ষমতায় এসেছে। এই পরিবর্তন ভারতের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হলেও, ভারত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারত শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করার জন্য কিছু অনুদান প্রকল্প প্রস্তাব করেছে।


নতুন প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার ডিসানায়েকে ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়ার বার্তা দিয়েছেন। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, উভয় দেশই সম্পর্কের গুরুত্ব উপলব্ধি করে। এই পরিস্থিতিতে ভারত তার কূটনৈতিক কৌশলকে কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে পারে।


(🔍 ওয়ার্ডস: শ্রীলঙ্কা ভারত সম্পর্ক বিশ্লেষণ, JVP সরকার শ্রীলঙ্কা, ভারত-শ্রীলঙ্কা কূটনীতি ২০২৫।)


🧭 ভারতের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ


এই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনগুলো ভারতের জন্য যেমন চ্যালেঞ্জ, তেমনি সুযোগও তৈরি করেছে।


  • 🔴 চ্যালেঞ্জ: চীনপন্থী সরকারগুলোর প্রভাব বৃদ্ধি, সীমান্ত উত্তেজনা, এবং বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ।


  • 🟢 সুযোগ: নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন করে সাজানো, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, এবং সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিনিময়কে আরও জোরদার করা।


ভারতের 'প্রতিবেশী প্রথম' নীতি এবং 'অ্যাক্ট ইস্ট' (Act East) কৌশল এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কূটনৈতিক দূরদর্শিতা এবং কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে পারে।




📊 উপসংহার: দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্ত


২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতি ভারতের জন্য এক নতুন পরীক্ষার ক্ষেত্র। কূটনৈতিক দক্ষতা, সময়োপযোগী অর্থনৈতিক বিনিয়োগ, এবং সাংস্কৃতিক সংযোগের মাধ্যমে ভারত তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে পারে। এই পরিবর্তনগুলোই নির্ধারণ করবে আগামী দিনে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক গতিপথ।


এই বিষয়ে আপনার মতামত কী? এই চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলো সম্পর্কে আপনার ভাবনা নিচে মন্তব্য করে আমাদের জানান।


(🔍 words Summary: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ২০২৫, নেপাল-ভারত সীমান্ত রাজনীতি, শ্রীলঙ্কা ভারত সম্পর্ক বিশ্লেষণ, দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতি, ভারতের প্রতিবেশী কূটনীতি।)

Comments


bottom of page