top of page
Search

ভারতের স্বয়ংক্রিয় ড্রোন প্রযুক্তি: আকাশ প্রতিরক্ষায় নতুন দিগন্ত

  • Writer: kousik pattanayak
    kousik pattanayak
  • May 9
  • 3 min read

Updated: Sep 5

ভূমিকা


আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রের প্রেক্ষাপটে স্বয়ংক্রিয় (Autonomous) ড্রোন প্রযুক্তি এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। বিশ্ব যখন অত্যাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) এবং স্বয়ংক্রিয় ড্রোন নিয়ে গভীর গবেষণা ও প্রয়োগে ব্যস্ত, তখন ভারতও এই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই। ভারতের স্বয়ংক্রিয় ড্রোন প্রযুক্তি আজ দেশের আকাশসীমাকে সুরক্ষিত রাখতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই প্রযুক্তি গোবাক হাঁসের (Gobak Duck) মতো অপ্রত্যাশিত এবং কার্যকর, যা তার কম উচ্চতায় দ্রুত উড়তে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী স্থির থাকতে পারার ক্ষমতার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।





ভারতের স্বয়ংক্রিয় ড্রোন প্রযুক্তির অগ্রগতি


ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং বেসরকারি সংস্থাগুলি যৌথভাবে এআই-চালিত স্বয়ংক্রিয় ড্রোন তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। NewSpace Research & Technologies এক্ষেত্রে একটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে, যারা এমন ড্রোন তৈরি করেছে যা শত্রু চিহ্নিতকরণ, পর্যবেক্ষণ এবং আঘাত হানতে সক্ষম।

* প্রথম পদক্ষেপ: ভারতের তৈরি শেষনাগ ১৫০ স্বয়ংক্রিয় ড্রোন ইতিমধ্যেই সফলভাবে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

* সাম্প্রতিক অর্জন: সম্প্রতি, ভারত পাকিস্তানের পাঠানো ৫০টিরও বেশি শত্রু ড্রোন নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে, যা এই প্রযুক্তির কার্যকারিতার প্রমাণ দেয়।

* কৌশলগত প্রয়োগ: এই ড্রোনগুলি উচ্চ গতিতে আক্রমণ, নজরদারি এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপযোগী।



স্বয়ংক্রিয় ড্রোন প্রযুক্তির মূল বৈশিষ্ট্য


✅ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দ্বারা চালিত: এই ড্রোনগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে শত্রুদের শনাক্ত করতে পারে, যা তাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর গতি বাড়ায়।

✅ নিম্ন উচ্চতায় উড্ডয়ন ক্ষমতা: গোবাক হাঁসের মতো নিচু দিয়ে উড়তে পারার ক্ষমতা শত্রুদের রাডার ফাঁকি দিতে সাহায্য করে।

✅ ম্যাশ নেটওয়ার্কিং: একাধিক ড্রোন একসাথে একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে, যা সমন্বিত অভিযান পরিচালনায় সহায়ক।

✅ জ্যামিং প্রতিরোধী প্রযুক্তি: শত্রুদের ইলেকট্রনিক যুদ্ধ বা সিগন্যাল জ্যামিংয়ের প্রভাব মোকাবেলা করার উন্নত ক্ষমতা এদের রয়েছে।

✅ স্বনিয়ন্ত্রিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ: ক্ষেত্রবিশেষে, এই ড্রোনগুলি সৈন্যদের সরাসরি নির্দেশের অপেক্ষা না করে নিজেরাই কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।





মুম্বাই নগরীর আকাশে উড়ন্ত ড্রোনের বহর, সান্ধ্য আলোতে ঝলমল করছে শহরের উঁচু ভবন এবং সাগরপাড়ের মনোরম দৃশ্য।
মুম্বাই নগরীর আকাশে উড়ন্ত ড্রোনের বহর, সান্ধ্য আলোতে ঝলমল করছে শহরের উঁচু ভবন এবং সাগরপাড়ের মনোরম দৃশ্য।


স্বয়ংক্রিয় ড্রোনের বহুমুখী ব্যবহার


১. বিধ্বংসী আক্রমণ ক্ষমতা

ভারতের স্বয়ংক্রিয় ড্রোনগুলি লোটরিং মিউনিশন (Loitering Munition) বা সাধারণভাবে পরিচিত কামিকাজে ড্রোন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

* মারাত্মক অস্ত্র বহন: এই ড্রোনগুলি বিস্ফোরক এবং উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র বহন করতে সক্ষম।

* সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের মাধ্যমে এরা নির্ভুলভাবে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।

* রাডারকে ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা: অত্যাধুনিক স্টিলথ প্রযুক্তি যুক্ত থাকায় শত্রুদের রাডারে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে।



২. উন্নত নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ


* উচ্চ রেজোলিউশন ক্যামেরা: এই ড্রোনগুলিতে থাকা অত্যাধুনিক ক্যামেরা শত্রুদের অবস্থান এবং কার্যকলাপের স্পষ্ট চিত্র ধারণ করতে পারে।

* ইলেকট্রো-অপটিক্যাল সেন্সর: এই সেন্সরগুলি রাতেও কাজ করতে সক্ষম, যা সার্বক্ষণিক নজরদারি নিশ্চিত করে।

* সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার (SAR): খারাপ আবহাওয়াতেও স্পষ্ট ছবি তোলার জন্য এই বিশেষ রাডার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।





৩. কার্যকর যোগাযোগ ও সিগন্যাল জ্যামিং


* RF ও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন: এই ড্রোনগুলি রিয়েল-টাইমে ডেটা আদান-প্রদান করতে RF এবং স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার করে।

* ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার (EW) ক্ষমতা: শত্রুদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিভ্রান্ত বা জ্যাম করার ক্ষমতা এদের রয়েছে।

* এআই ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ: জরুরি পরিস্থিতিতে, সেনারা সরাসরি নির্দেশ দেওয়ার আগেই এরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে।




মরুভূমির আকাশে ড্রোন যুদ্ধের মুহূর্ত, যেখানে বিস্ফোরণের পাশাপাশি একাধিক ড্রোন একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ধূলাযূক্ত পরিবেশ এবং মিসাইল হামলার সময় বাস্তবিক যুদ্ধ পরিস্থিতির চিত্র।
মরুভূমির আকাশে ড্রোন যুদ্ধের মুহূর্ত, যেখানে বিস্ফোরণের পাশাপাশি একাধিক ড্রোন একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ধূলাযূক্ত পরিবেশ এবং মিসাইল হামলার সময় বাস্তবিক যুদ্ধ পরিস্থিতির চিত্র।


ভারতের স্বয়ংক্রিয় ড্রোনের উল্লেখযোগ্য সফলতা


🇮🇳 ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাফল্য (২০২৫)

* ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্প্রতি ৫০টিরও বেশি শত্রু ড্রোন সফলভাবে ধ্বংস করেছে।

* এই সাফল্যের পেছনে Spyder, Akash, Pechora ও S-400 এর মতো উন্নত ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

🇮🇳 ভবিষ্যতের দিগন্ত

* ভারতের প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আরও উন্নত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন।

* ভবিষ্যতে ১০০০ কিলোমিটারের বেশি রেঞ্জের দূরপাল্লার স্বয়ংক্রিয় ড্রোন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

* এইসব উন্নয়ন ভারতকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ড্রোন প্রযুক্তি সম্পন্ন দেশে পরিণত করবে।



উপসংহার


ভারতের স্বয়ংক্রিয় ড্রোন প্রযুক্তি নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতের যুদ্ধ কৌশলে একটি নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করবে। এটি কেবল ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে না, বরং স্বনির্ভর প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং আধুনিক যুদ্ধ কৌশলের ক্ষেত্রেও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।






Comments


bottom of page